কখন কেমন শাড়ির ডিজাইন পড়া উচিত? Saree Designs

কখন কেমন শাড়ির ডিজাইন পড়া উচিত?



আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়ি পড়ে থাকি। কিন্তু তার আগে আমাদের সবার জানতে হবে শাড়ি কি?



তাহলে চলুন জানা যাক শাড়ি কি?



শাড়ি হচ্ছে নারীদের ঐতিহ্যবাহী ও নিত্যনৈমিত্তিক বস্ত্র। এটি সেলাইবিহীন কাপড় দিয়ে তৈরি এবং এটি অনেক লম্বা।

সাধারণত‍ঃ একটি শাড়ি চার থেকে নয় মিটার (প্রায় ১২ হাত বা ১৮ ফুট) দীর্ঘ কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়। বিভিন্নভাবে ভাজ করে শাড়ি কোমরে জড়িয়ে একপ্রান্ত কাঁধের উপর দিয়ে ঝুলিয়ে দেয়া হয়,যাকে আচল বলা হয়।

শাড়ি সাধারণত পেটিকোট, লেহেঙ্গা/ঘাগরা, সায়া এর উপরে পরা হয় এবং উপরের অংশে ব্লাউজ/চোলি ব্যবহার করা হয়।




তো এখন জানা যাক কখন কেমন শাড়ির ডিজাইন পড়া উচিত?

সাধারনত নারীদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ডিজাইনের এবং বিভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের শাড়ি পরতে দেখা যায়।




বৃষ্টি দিনের শাড়ি

 


মেয়েরা বৃষ্টিতে ভিজতে খুব পছন্দ করে। আর এই সময় জর্জেট শাড়ি পড়ে মেয়েরা বৃষ্টিতে ভিজে। কেননা জরজেট শাড়ি তারাতারি শুকিয়ে যায়, এবং জর্জেটের শাড়িতে ছিটে দাগও পড়ে না,যেটা অন্য শাড়িতে পড়তে পারে। তাই বৃষ্টির দিনে এমন শাড়ির সুবিধা বেশি।




গরমের শাড়ি


গরমের সময় আপনি জর্জেট, ভেলভেট,কাতান,বেনারসি বা ভারি শাড়ি পরতে চাবেন না। কারণ গরম আবহাওয়া এসব শাড়ির জন্য উপযুক্ত নয়। তাই গরমে সুতি শাড়ি বিকল্প নেই। কিন্তু সব জায়গায় সুতির শাড়ি পরে যাওয়াও যায় না।

তাই  বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সুতির সঙ্গে আরও এমন অনেক ফ্যাব্রিক শাড়ি পরতে দেখা যায় নারিদের। যেমনঃ  মনিপুরি শাড়ি,জুম শাড়ি,জামদানি শাড়ি,তাতের শাড়ি,খেশ শাড়ি ইত্যাদি ইত্যাদি।



পহেলা বৈশাখে শাড়ি



পহেলা বৈশাখে শাড়ির সাথে অন্য কোনো পোশাকের তুলনা হয় না। এসময় নারীরা লাল সাদা শাড়ি পরে ঘুরে বেরায়। যেহেতু ঐ সময় গ্রীষ্মের দাবদাহ থাকে তাই ঐ সময় পাতলা সুতির শাড়িতে খুব আরাম পাওয়া যায়। তাই সবাই পাতলা লাল,সাদা সুতি শাড়ি পড়ে বের হয়।





শীতের সাজে শাড়ি



শীত মানেই যে কোট বুট সুয়েটর এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। শীতের রাত হোক বা দিন, শাড়িতেই হয়ে উঠক সাজসজ্জা এবং ঝলমলে।
কিন্তু শীতে ফ্যাশান ঠিক রেখে  শাড়ির সঙ্গে অনেকে শাল, হাল ফ্যাশনের কোটি, সোয়াটার বা ব্লেজার পড়ে থাকে। যেভাবে ব্যবহার করতে হবে :

* শাড়ির সঙ্গে ফুলহাতা বা হাফহাতা সোয়াটার ব্লাউজের মতো পরুন।
* শাড়ি পরে তার উপর জ্যাকেট চাপিয়ে নিন।এতে ফ্যাশান বজায় থাকবে আর  ঠান্ডাও লাগবে না।
* লম্বা কোটি পরে নিন আর শাড়ির আঁচল গলায় ওড়নার স্টাইলে পেঁচিয়ে নিন।
* ব্লেজার বা কোট যাই থাকুক না কেন, শাড়ি পরার পর উপরে চাপিয়ে নিন।  কোটের বোতাম খোলা রাখবেন।



বিয়েতে শাড়ির কেমন হবে



নারীকেই শাড়িতে বেশ লাগে হোক সে কালো বা ফর্সা। নারীদের সবসময় শাড়ি পড়া সম্ভব হয়ে উঠে না। কিন্তু  বিয়েতে পোশাকের মেনুতে শাড়ি থাকা বাধ্যতামূলক। প্রাচীনকালে কনের শাড়ি হত লাল টুকটুকে বেনারসি শাড়ি। কিন্তু বর্তমানে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শাড়ির ধরনও পরিবর্তন হয়ে গেছে। ভিন্ন ভিন্ন অনুষ্ঠানে কনে ভিন্ন ডিজাইনের শাড়ি পরে।যেমনঃ


এনগেজমেন্ট দিনে



এনগেজমেন্টের দিনে হালকা কাজের শাড়ি পড়ে থাকে বেশি।হতে পারে মসলিন, শিফন, সফট সিল্ক, ক্রেপ জর্জেট। রঙ হতে পারে নীল, গোলাপি, পিচ, লাইট কালার ইত্যাদি।


গায়ে হলুদের দিনে

 

গায়ে হলুদে সুতি শাড়িই সবচেয়ে মানানসই।তবে সুতির পাশাপাশি টাঙ্গাইল হাফ সিল্ক বা সফট সিল্ক,জামদানিও রয়েছে।আর কালার এর ভিতর হলুদের পাশাপাশি কমলা, গাঢ় সবুজ, কাচাঁ মেহেদি, হালকা বেগুনি চলছে এখন।


বিয়ের দিনে


বিয়ে বললেই যেন চোখের সামনে ভেসে ওঠে লাল টুকটুক শাড়ি। তবে লালের পাশাপাশি আছে মেরুন, জাম, গাঢ় নীল, বেগুনি বা গোলাপি।এছাড়া হতে পারে বেনারসি, কাতান, টিস্যু বা মসলিন।আরও আছে জরির কাজ করা শাড়ি, সিকোয়েন্সের ভারী কাজ, অ্যামব্রয়ডারি, মুক্তা বা কুন্দনের কাজ এসব শাড়িও বেঁছে নেওয়া যেতে পারে।আর সাথে  কন্ট্রাস্ট ওড়না।


বৌভাতের দিনে


বৌভাতে কনে ফ্যাশনেবল, ট্রেন্ডি হালকা কাজ করা শাড়ি থাকে।এর রঙ হতে পারে গোল্ডেন, সফট পিংক, পিচ এমনকি সাদা।বৌভাতে ভালো লাগে সিফন, মসলিন আর হালকা কাজের জামদানি।


অফিসে শাড়ি কেমন হবে


শাড়ি শুধু উৎসবেই পড়ে না, বর্তমানে নারীরা অফিসে শাড়ি পড়ে যাচ্ছে।শিক্ষিকা, বিমানবালা,ব্যাংকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের নারীরা পড়ে। অফিসে বিভিন্ন কাজ করতে হবে তাই আরামদায়ক ফেব্রিকের শাড়ি পড়াই ভাল।সিল্ক বা জর্জেটের শাড়ি নারীরা বেশি আরাম পায়,এবং এটা মেইনটেন করাও সহজ হবে।



পার্টিতে কেমন শাড়ি পড়তে হয়



বিভিন্ন পার্টি অনুষ্টানে মেয়েরা বিভিন্ন রকমের শাড়ি পড়তে দেখা যায়।পার্টির মুড বুঝে শাড়ি নির্বাচন করতে হবে। জন্মদিনের পার্টি হলে এক রকম, বিয়ের পার্টি হলে অন্যরকম আবার গেটটুগেদার হলে তো তার ধাঁচই পাল্টে যাবে। রাতের পার্টিতে পরা যেতে পারে অ্যান্ডি সিল্ক,হাফসিল্ক,রাজশাহী সিল্ক, মসলিন, জামদানি, কাতান, জারদৌসি। আর রাতে সব সময় ডার্ক কালারই বেশি মানায় তাই গাঢ় মেরুন, গাঢ় সবুজ, অ্যাশ, কালো, লাল, ম্যাজেন্টা ভাল লাগবে।
আর দিনের পার্টিতে হালকা শারিতেই ভালো লাগে। দিনের পার্টিতে পরার জন্য  সুতি শাড়ি বেশ ভাল লাগে।শাড়ির ওপর নকশিকাঁথার কাজ, নানারকম হ্যান্ড পেইন্টিং দেখে মনে হয় একটা শিল্প। আর কালার হালকা  যদি হলুদ, আকাশি, ফিরোজা, কলাপাতা কালার, জলপাই কালার এগুলো বেশ লাগবে।এসব ডিজাইন করা শাড়ি অনায়াসে দিনের পার্টিতে পরা যেতে পারে।