শাড়ি পরা সহজ নাকি কঠিন? শাড়ি খুব আরামদায়ক পোশাক?

বাঙালি নারীর সবচেয়ে নান্দনিক পোশাক হচ্ছে শাড়ি। যুগে যুগে শাড়ি আমাদের ফ্যাশনের অংশ হয়েছে।শাড়ি খুব আরামদায়ক পোশাক, তাই মেয়েরা ভালোবেসেই শাড়ি পরে থাকে। শুধু বাঙালিরাই না ভারত, শ্রীলংকা এমনকি পাকিস্তানের অনেকাংশের মেয়েরা শাড়ি পরে থাকে। এখন শাড়ি একটি ভীষণ এলিগেন্ট পোশাক, যেকোনো মেয়েকে শাড়ি পরলে অন্য যেকোনো পোশাকের তুলনায় ভীষণ সুন্দর লাগে৷


শাড়ি পরা সহজ নাকি কঠিন সেটা নির্ভর করে সে কেমন শাড়ি পরতে পারে।এবং সে সবসময় শাড়ি পরতে অভ্যস্ত কিনা। আর সে যদি শাড়ি পরার নিয়ম ভালোভাবে জানে তবে তার কাছে শাড়ি পরা সহজ,আর যদি না জানে তবে কঠিন।

 


এখন কথা হচ্ছে শাড়ি পরতে হলে কিভাবে পরতে হবে-



আপনি যদি শাড়ি পরতে চান তবে তার আগে আপনি কোন জুতাটি পরবেন তা আগে ঠিক করতে হবে।কারণ আপনার জুতার উপর নির্ভর করবে যে আপনি শাড়িটি কতটুকু লম্বা করে পড়বেন। শাড়ি পরার আগে আপনাকে শাড়ির সাথে ম্যাচিং করে পেটিকোট নিতে হবে। তারপর আপনার শাড়ি যতটুকু লম্বা হবে আপনাকে ততটুকু লম্বা করে পেটিকোট পরতে হবে। তারপর আপনার শাড়ি যতটুকু লম্বা হবে আপনাকে ততটুকু লম্বা করে পেটিকোট পরতে হবে।



তাহলে চলুন কিভাবে সহজ ভাবে শাড়ি পরা যায়


১) কোমরের চারদিকে শাড়ি গুজা



প্রথমে শাড়ির আচলের অপর পাশ আপনার কোমরের চার দিকে গুজতে থাকবেন। শাড়ি এমনভাবে গুজবেন যেন আপনার শাড়ির আচল বাহির পাশে থাকে। আস্তে আস্তে শাড়ি গুজবেন তানাহলে আপনার শাড়িটা অগোছালো দেখাবে।



২) তারপর কুচি দেয়া



দ্বিতীয়ত আরেকবার শাড়িটি নাভির বাম পাশ দিয়ে কোমরের সাথে পেঁচিয়ে নেয়া। কিন্তু নাভির ডান পাশে এসে থেমে যাবে। এবার বাম হাতের তালু দিয়ে শাড়ি ধরতে হবে এবং একটি একটি কুচি দিতে হবে। এভাবে ৫-৬টি প্লিট দিতে হবে। তারপর সব গুলো প্লিটের মাথা এক সাথে নিয়ে একবারে পেটিকোটের ভিতর গুঁজে ফেলতে হবে।



৩) প্লিটগুলো গুছিয়ে নেয়া

আপনি সবগুলো প্লিট এক সাথে ধরবেন। তারপর একটি সেফটি পিন দিয়ে প্লিটগুলো পিন করে দিবেন। যাতে প্লিটগুলো ভাজ হয়ে থাকে। এবার প্লিটগুলো নিচ পর্যন্ত গুছিয়ে নিবেন। আপনি প্লিটে পিন মারার সময় মনে রাখবেন যে, পিন যেন আপনার নাভি থেকে ২০ সে মি দূরে থাকে।




৪) সবশেষে আচঁল ঠিক করা

সবশেষে বাকি শাড়িটা বাম কাঁধের উপর ছড়িয়ে দিয়ে সুন্দর ব্রুজ কিংবা পিন লাগিয়ে দিতে হবে।

সব কিছুই প্রস্তুতির উপর নির্ভর করে। এভাবে বেশ কয়েকবার নিয়ম অনুযায়ী শাড়ি পরতে হবে। তবেই দেখবেন ধীরে ধীরে আপনি এটাতে দক্ষ হয়ে উঠেছেন। তখন নিজের শাড়ি নিজে তো পরবেনই সাথে অন্যদেরও পরিয়ে দিতে পারবেন। তবেই শাড়ি পরা সহজ হবে।


শাড়ি, প্রায় ১০৮ রকম পদ্ধতিতে পরা যায়। তবে এদের মধ্যে নিভি, বাঙালি, গুজরাটি, তামিল, শ্রীলঙ্কান এবং মারাঠি স্টাইল-ই হল স্বতন্ত্র বেশি পরা হয়।

আজকে আমি আপনাদেরকে কিছু শাড়ি পরার স্টাইল শিখিয়ে দিব যাতে আপনারা যে কোন বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে, নিজ নিজ ব্যক্তিত্বের আস্ফালন ঘটাতে পারেন।


১) বাঙালি স্টাইল

বাঙালি স্টাইলে শাড়ি পড়তে প্রথমে শাড়িটিকে নাভি থেকে শুরু করে কোমর বরাবর বৃত্তাকার-এ নাভির ওপরে এবং ডান দিক থেকে ঘুরিয়ে পেছনের মাঝামাঝি অংশে, পেটিকোট-এর মধ্যে গুঁজতে হবে। তারপর বাকি অংশ সরু প্লিট করে বাম কাঁধের ওপর দিয়ে ফেলে দিন, যাতে পায়ের গোড়ালি স্পর্শ করে। ফেলে দেওয়া অংশটি নিয়ে, সামনের দিক থেকে ঘুরিয়ে, ডান কাঁধের ওপর দিয়ে পেছনদিকে ঝুলিয়ে দিতে হবে

কাতান শাড়ি কখন পড়বেন?



২) তামিল স্টাইল শাড়ি পরা

তামিম স্টাইলে শাড়ি আপনাকে পড়তে হলে, অবশ্যই একটি কুচির(মুন্ডি) মাথা বের করতে হবে । শাড়িটি পড়ার আগেই আপনাকে শাড়ির আঁচলের উল্টোদিকে আটটি কুচি করে নিতে হবে। এই সময়েই আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে যে, মুন্ডি কি ধরনের হবে। যদি মুন্ডি ফ্ল্যাট হয়, তাহলে বড় বড় ভাজ দিয়ে পাখার মতো করতে হবে আর তা না হলে, ভাঁজ ছোট করলেই কাজ মিটবে।এরপর ওই কুচি-টি পেছনের পেটিকোটের সঙ্গে লাগিয়ে শাড়ি পরা শুরু করতে হবে। অতঃপর শাড়িটি পেচিয়ে সামনে আনতে হবে আবার কুচির ওপর নিয়ে যেতে হবে।এবার আঁচলটি, বাম কাঁধের ওপর দিয়ে পেছনে ঝোলাতে হবে। একটি গিট, নাভির কাছে দিতে হবে। এবার পেছনের কুচি গুলোকে পাখার মতো করে সাজাতে হবে।


৩) নিভি স্টাইল শাড়ি পরা

প্রথমেই শাড়ি-টিকে আপনার কোমর-এর বাম দিক থেকে ডান দিকে পেঁচিয়ে পেটিকোটের ভেতর গুঁজে দিতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই শাড়ির ঝুলটি যেন ভূমির থেকে দু ইঞ্চি ওপরে থাকে।পেটিকোটের মধ্যে শাড়িটি গোঁজা যেখানে শেষ হয়েছে, সেখান থেকে আটটি কুচি আপনাকে বানাতে হবে। কুচি বানানো হয়ে গেলে, সবগুলো কুচি একত্রিত করে পেটিকোট এর মধ্যে নাভির ওপরে গুঁজে দিতে হবে।শাড়ীর বাকি অংশ আপনার শরীরের বাম দিক দিয়ে, পেছন থেকে ঘুরিয়ে সামনে এনে কাঁধের ওপরে ফেলতে হবে। তবেই শাড়ি পরা শেষ হবে।



৪) গুজরাটি স্টাইল শাড়ি পরা



গুজরাটি স্টাইলে শাড়ি পরিধান অনেকটাই, নিভি স্টাইল-এর মত। এখানে আপনার শাড়ির আঁচলটি, বাম হাতের নিচের থেকে ডান কাঁধে আড়াআড়ি ভাবে উঠে পেছনে না ঝুলে, সামনের দিকে ঝুলবে।অতঃপর ঝুলন্ত আঁচলটির থেকে একটি কোনা বের করে পরিহিত ব্লাউজের সঙ্গে ডান দিকে, কাঁধের ওপর পিন-আপ করতে হবে।



৫)মারাঠি স্টাইল শাড়ি পরা



পুরো ১২ হাতের একটা শাড়ি নিন। এখন শাড়িটি কে দুটো অংশে এমনভাবে ভাগ করুন, যাতে একটি অংশের তুলনায়, আরেকটি অংশ বেশ বড় হয়।নাভির নিচ বরাবর শাড়ি-টিকে একটা গিঁট দিন। গুজার দিক থেকে, দু-পায়ের মাঝ বরাবর ধুতির আকারে শাড়ির কম অংশটুকুকে নিয়ে ব্যাক সাইডে গুঁজে দিন।শাড়ির বেশি অংশ অর্থাৎ আচল বরাবর সরু ভাঁজ করে (কমপক্ষে পাঁচটি)দুই পায়ের মাঝ বরাবর কোমর বেস করে ঘুরিয়ে, বাম কাঁধ বরাবর পেছনে ফেলুন। নিজেকে আরও মোহময়ী করে তুলতে পিন-টাকে ধরে, একটা কোমর বন্ধনী বেঁধে ফেলুন।৯ অথবা ২০, এদের জন্য এই স্টাইলটা একদম পারফেক্ট। 

শাড়ি পরার এমন অসাধারন পদ্ধতি যাতে খুব লম্বা ও আকর্ষণীয় দেখাবে । Wear Cotton Saree in Just 5 Minutes



এভাবে শাড়ি পরলে আর কঠিন মনে হবে না।আর সবসময় শাড়ি পরলে শাড়ি পরাও অনেক সহজ হয়ে যায়।